ঢাকা,সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

খুটাখালীতে স্বামী সংসার ফিরে পেতে অন্ত:স্বর্ত্তা তরুনীর আর্তনাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: দশমাস আগে প্রেমের টানে তরুনী শাহনুর বেগম (২২) ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন তৌহিদুল ইসলামকে (২৭)। বিয়ের পর তাঁরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে যথারীতি সংসারও করেছেন। বর্তমানে তরুনী বধু শাবনুর পাঁচমাসের অন্ত:স্বর্তা। তরুনী শাবনুর কক্সবাজার সদর উপজেলার জানেরঘোনা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র মেয়ে আর স্বামী চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের মেধাকচ্ছপিয়া এলাকার আক্তার হোসেনের ছেলে।

ভুক্তভোগী তরুনীর পরিবার সুত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে সামাজিক রীতিনীতি মোতাবেক নিকাহ রেজি: এবং কাবিননামা মুলে শাবনুর বেগমের বিয়ে হয় খুটাখালীর আবদুল জব্বারের ছেলে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে অতিবাহিত হচ্ছিল। একদিন বেড়াতে এসে স্বামীর আনোয়ার হোসেনের খালাতো ভাই তৌহিদুল ইসলাম কৌশলে তাঁর সঙ্গে ভাব জমিয়ে ফেলে। এরপর তৌহিদুল ইসলামের প্রেমে মক্ত হয়ে পড়েন শাবনুর। তাকে নানাধরণের প্রলোভন দেখিয়ে একপর্যায়ে খালাতো ভাইয়ের সংসার থেকে চলে আসতে বাধ্য করেন তৌহিদুল ইসলাম। পরবর্তীতে দুইজনই পালিয়ে পবিত্র কোরান শরীফ ছুঁেয়ই শপথ করে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন।

তরুনী শাবনুর বেগম বলেন, পালিয়ে বিয়ে করার সময় তাঁর কাছে জমানো নগদ এক লাখ টাকা ও ৮০ টাকার স্বর্ণলঙ্কার ও অন্যান্য মালামাল তৌহিদুল ইসলামের হাতে তুলে দেন। বিয়ের পর তাঁরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসারও শুরু করেন। বর্তমানে শাবনুর বেগম পাঁচমাসের অন্ত:স্বর্ত্তা।

তরুনী শাবনুর বেগম দাবি করেন, পালিয়ে দুইজন বিয়ে করলেও স্বামী তৌহিদুল ইসলাম বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেনি। অপরদিকে স্বামীর সঙ্গে সংসার করার ফলে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। এতে নিজের কাছে নিজেকে নিয়ে অসহায়ত্ব তৈরী হয় শাবনুরের মনে। এ অবস্থায় সর্বশেষ রোজার ঈদের দুইদিন পর অর্থাৎ ২৭ মে স্বামী তৌহিদুল ইসলামকে বিয়ের কাবিনানামা সম্পাদন করতে চাপ দেন শাবনুর। এতে রীতিমত তা করতে অস্বীকৃতি জানায় তৌহিদ। উল্টো যৌতুক হিসেবে আরও টাকা বাপের বাড়ি থেকে তাকে এনে দিতে শাবনুর বেগমকে বলে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর শাররীকভাবে ব্যাপক মারধর করে শাবনুর বেগমকে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় স্বামী তৌহিদুল ইসলাম ও তাঁর পরিবারের লোকজন।

ভুক্তভোগী তরুনী এবং তাঁর পরিবার সদস্যরা অভিযোগ তুলেছেন, পাঁচমাসের অন্ত:স্বর্ত্তা হয়ে পড়ার পরও বিয়ের কাবিননামা সম্পাদন না করায় বিষয়টি স্বামী তৌহিদুল ইসলাম ও তাঁর পরিবারকে জানানো হয়। এইজন্য তাদেরকে বারবার বলা হলে উল্টো তাঁরা কৌশলের আশ্রয় নেন। এমনকি সম্প্রতি সময়ে বিয়ের ঘটনাটিকে প্রভাবিত করতে তাঁরা বাল্যবিয়ের নাটক সাজিয়ে খবর প্রকাশের মাধ্যমে অভিযুক্ত অপরাধীকে রক্ষার চেষ্ঠা চালাচ্ছে। পাশাপাশি হতভাগী তরুনীর পক্ষে এই অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দেয়া স্থানীয় নতুন বাজার গ্রামের ওমর আলী ও ছারিঘোনা গ্রামের নুরুল ইসলাম পেঠানসহ একাধিক প্রতিবাদি ব্যক্তিকে হয়রাণি করতে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।

তরুনী শাবনুর বেগমের মায়ের অভিযোগ, বর্তমানে অভিযুক্ত স্বামী তৌহিদুল ইসলাম ও তাঁর পিতা আক্তার হোসেন এবং স্বামীর ভাই জমির উদ্দিন, জয়নাল আবেদিন, সহযোগিরা মিলে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এমনকি বিয়ের ঘটনায় কোন ধরণের বাড়াবাড়ি করলে শাবনুর বেগমকে প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছে। এই ধরণের পরিস্থিতির মধ্যেও স্বামীর সংসারে ফিরে যেতে আগ্রহী অন্ত:স্বর্ত্তা শাবনুর বেগম। এইজন্য ভুক্তভোগী তরুনী শাবনুর প্রশাসনের কাছে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। অন্যথায় আত্মহত্যার পথ বেঁেচ নেয়া ছাড়া তাঁর সামনে আর কোন পথ খোলা নেই বলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান ভুক্তভোগী এই তরুনী।

পাঠকের মতামত: